আজকের এই পোস্টে আমি হলুদ এর গুনাগুন নিয়ে আলোচনা করবো।
ত্বক ও সৌন্দর্য বজায় রাখতে এর জুড়ি নেই।বিভিন্ন সমস্যায় এটি ভালো দাওয়াই।হলুদের বৈজ্ঞানিক নাম কারকিউমা লংগা।
রুপচর্চার সবচেয়ে প্রাচীন প্রাকৃতিক উপাদান। ত্বকের স্বাভাবিকতায় সহায়ক, তাছাড়া রুক্ষতা কাটিয়ে লাবণ্য ধরে রাখার জন্য এটি জুড়ি হীন।
প্রাচীন ভারতে, আর্য সভ্যতার সময়ে হলুদের ব্যবহার শুরু। তখন থেকেই নাকি বিয়ের সময় বর-কনেকে হলুদ মাখানোর রেওয়াজ শুরু হয়।
হলুদ ও ময়দা:
যে কোনো ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক স্ক্রাব তৈরি করে নিতে হলুদ ও ময়দা মিশিয়ে নিতে পারেন। এটি ত্বকের জন্য বেশ সংবেদনশীল ও উপকারি। এটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল কমিয়ে রাখে।
হলুদ ও ময়দার সঙ্গে সামান্য পরিমান পানি মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিন। উজ্জ্বল ও কোমল ত্বক পেতে চক্রাকারভাবে নিয়মিত এটি ত্বকে লাগান এবং শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
হলুদ ও লেবুর রস: লেবুর রসে আছে ব্লিচিং উপাদান এবং হলুদে আছে ত্বক কোমল এবং ভালো থাকার উপাদান।
ত্বক উজ্জ্বল ও সুন্দর রাখতে হলুদের গুঁড়া ও লেবুর রস মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে ব্যবহার করবেন।নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও নমনীয়তা বৃদ্ধি পায়।
হলুদ ও দুধ: হলুদ ও দুধের মিশ্রণ ত্বকের সমস্যা করে থাকে এমন উপাদানের বিরুদ্ধে কাজ করে ত্বককে রাখে সুস্থ ও সুন্দর।
কাঁচাদুধের সঙ্গে হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে মুখ ও গলায় লাগিয়ে কিছুক্ষন পর শুকিয়ে আসলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে ত্বক থাকে কোমল এবং নমনীয়।
হলুদ ও মধু: ত্বকের ভেতরের আর্দ্রতা ও রুক্ষতা দূর করে উজ্জ্বল ত্বক ফুটিয়ে তুলতে হলুদ ও মধুর মিশ্রণ সাহায্য করে থাকে।
মধুতে আছে প্রাকৃতিক উপাদান ত্বক আর্দ্র রাখার ক্ষমতা যা ত্বক উজ্জ্বল করে। মধু ও হলুদের তৈরি প্যাক ব্যবহারে ত্বক স্বাভাবিকভাবে চকচকে ও সুন্দর করে তোলে।
হলুদ ও নারিকেল তেল: হলুদ ও নারিকেলে মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান। এছাড়াও নারিকেলের তেল খুব ভালো ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ থাকে
খাঁটি নারিকেল তেলের সঙ্গে হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে লালচেভাব, সংক্রমণ ও শুষ্কতা কমাতে ব্যবহার করা যায়। ত্বক পরিষ্কার করে পাতলা ভেজা কাপড় ব্যবহার করলে ত্বককে বেশ প্রাণবন্ত মনে হবে।
হলুদ ও পানি: শরীরের ত্বকে অবাঞ্ছিত লোমের বৃদ্ধি কমাতে প্রতিদিন হলুদ ও পানির মিশ্রণ তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন।
যে স্থানে অবাঞ্চিত লোমের বৃদ্ধি কমাতে চান সেখানে হলুদ ও পানির মিশ্রণ তৈরি করে একটি সমতল ও পরিষ্কার বস্তুর সাহায্যে আস্তে আস্তে ঘষতে হবে। শুকিয়ে এলে তা পরিষ্কার পানির সাহায্যে ধুয়ে ফেলতে হবে। পার্থক্য দেখতে যতবার সম্ভব এটি নিয়মিত করতে পারেন।
হলুদ ও জলপাইয়ের তেল: হলুদে আছে নানা ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বক তরুণ ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে থাকে জলপাইয়ের তেল ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা রক্ষা করে।
হলুদ ও জলপাইয়ের তেল মিশিয়ে তা মুখ ও গলায় লাগান। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে হালকা ভাবে মালিশ করুন। এতে নতুন কোষ বৃদ্ধি পাবে। পানি দিয়ে ধুয়ে নমনীয় ত্বক অনুভব করতে পারবেন।
হলুদের সঙ্গে লেবুর রস ও মধু: এই মিশ্রণ ত্বক ব্রণ মুক্ত রাখতে ও ত্বকের নির্জীবতা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
হলুদের সঙ্গে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে মুখ এবং গলায় ব্যবহার করুন। শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকে উজ্জ্বল ভাব বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্রণও দূর হবে।
ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে, ফেসিয়াল হেয়ার বা মুখের লোম ওঠা রোধ করার কাজেও ব্যবহৃত হতে পারে এটি। যা থেকে মুক্তি দিতে পারে হলুদ। তবে এ ব্যবহার করতে হয় প্রতিদিন। কাঁচা হলুদ ভালোভাবে বেটে আলতো ঘষে লাগাতে হবে মুখে।
দীর্ঘ দিনের পুরনো ব্রণের দাগ দূর করার জন্য কাঁচা হলুদ ও নিমপাতা বেটে দাগের উপর নিয়মিত লাগালে কিছুদিনের মধ্যে ফিকে হতে শুরু করে দাগ।
এলার্জি সমস্যায় প্রতিদিন হলুদ মেশানো পানিতে গোসল সেরে নিলে সমস্যা অনেকটাই কমে যায় বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
খুশকি প্রতিরোধে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা যায় হলুদ। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এটি প্রমাণিত।
পড়ুন - কোন ভিটামিনের অভাবে হাত পা জ্বালা পোড়া করে
হলুদ মাথার ত্বকে ইচি ভাব বা চুলকানি প্রবণতা কমায় এবং চুল ঝরেপড়া রোধে সাহায্য করে। সেজন্য তেলের মতো করে হলুদের রস চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখতে হবে। রসের পরিবর্তে পেস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। তারপর আধাঘন্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে।